রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বেশীর ভাগ সরকারী হাট বাজারে চরম অব্যবস্থাপনা বিরাজ করছে । হাট বাজার ইজারাদার কর্তৃক চলছে পজিশন বিক্রি । ফলে হাটবাজার গুলোর ব্যবসার সংকুচিত হয়ে আসছে এবং সরকারী স্থান ক্রয়ের মাধ্যমে অনেকে যেমন প্রতারিত হচ্ছে অন্য দিকে মালামাল ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে জনগনকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পীরগঞ্জের ১৫ টি ইউনিয়নে মোট হাট বাজারের সংখ্যা ৩৪ টি । যে গুলো প্রতি বছর সরকারী ভাবে ইজারা দেয়া হয় । ইজারা প্রদানকৃত এ হাট বাজার থেকে অর্জিত হয় সরকারের মোটা অংকের অর্থ । অথচ পীরগঞ্জের বেশীর ভাগ হাট বাজারে নাজুক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে । নাজুক পরিস্থিতির শিকার হাটবাজার গুলোর মধ্যে গুর্জিপাড়া, শানেরহাট, মাদারগঞ্জ, চতরা, বালুয়া, বড়দরগাহ, কুমেদপুর, রসুলপুর, কলোনী বাজার, মাদারগঞ্জ অন্যতম ।
উক্ত হাট বাজার এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা গেছে, উল্লেখিত হাট বাজার সহ উপজেলার বেশীর ভাগ হাট বাজারে ইতিপুর্বে ভ’মি অফিস থেকে শর্ত সাপেক্ষে ব্যবসা করার জন্য যে সকল ব্যবসায়ীদের মাঝে আধা শতাংশ স্থান এক সেনা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছিল সে বরাদ্দ কাগজে কলমে থাকলে বাস্তবতার সঙ্গে মিল নেই । বরাদ্দ প্রাপ্ত দোকানদারগনের অধিকাংশ দোকানদার ব্যবসা থেকে বিরত রয়েছেন কিংবা হাট ইজারাদারদের সহযোগীতায় মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে অন্যের নিকট ভাড়া দিয়েছেন কিংবা বিক্রি করেছেন । ইতিমধ্যে সরকারী এ হাট বাজারের অনেক স্থান মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিক্রি হয়েছে । যাদের নামে স্থান বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল তাদের অনেকেই ব্যবসা করছেন না । অন্যের নিকট বিক্রি করেছেন । এলাকাবাসী মনে করেন এ ব্যাপারে তদন্ত হলে মুল রহস্য বেড়িয়ে আসবে।
এছাড়া হাট বাজার গুলোর নির্ধারিত তোহা বাজারেও গড়ে উঠেছে অবৈধ দোকান ঘর। এর ফলে সংকুচিত হয়ে এসেছে পেরিফেরির খালী স্থান ও তোহা বাজার । ফলে অস্থায়ী ও ক্ষুদ্র পণ্য বিক্রেতারা পেরিফেরির খালী স্থান ও তোহা বাজারে পণ্য বিক্রির সুবিধা না পেয়ে হাটের অভ্যন্তরের রাস্তা ও গলিতে বসে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন । অনেক ভ্রাম্যমান ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা সে সুযোগ থেকেও বঞ্চিত থাকছেন ।
যে সকল হাটবাজারে এলজিইডির তত্বাবধানে মহিলাদের জন্য পৃথক স্থায়ী মার্কেট করা হয়েছিল সে গুলো চলে গেছে পুরুষদের দখলে । হাট বাজার গুলোতে নেই পর্যাপ্ত নলকুপ, ল্যাট্রিন, ড্রেন ও পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা এবং অভ্যন্তরে যত্রছত্র পড়ে আছে আবর্জনার স্তুপ । ফলে হাট বাজার গুলিতে প্রতিনিয়ত অস্বাস্থ্যকর অবস্থা বিরাজ করছে ।
হাট বাজার গুলিতে নির্ধারিত টোল আদায়ের মুল্য তালিকা ঝুলিয়ে রাখার নিয়ম থাকলেও সে নিয়ম উপেক্ষিত রয়েছে । ফলে ইচ্ছেমত টোল আদায় নিয়ে ইজারাদের সঙ্গে ক্রেতা বিক্রেতাদের প্রতিনিয়ত বাক বিতন্ডা চলছেই । সার্বিক এ পরিস্থিতির কারনে হাট বাজার গুলিতে জনসাধারনের পণ্য ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে অনুকুল পরিবেশ বিঘিœত হচ্ছে।
সাধারন মানুষ ও পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও হাটবাজার তদারকী কমিটি হাট বাজার গুলোর এ অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা রোধে কায্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করলে হাটবাজার গুলোর এ নাজুক পরিস্থিতি রোধ করা সম্ভব । অন্যথায় হাটবাজার গুলোর এ পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে ।